মুনীর চৌধুরী
১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জে মুনীর চৌধুরী জন্মগ্রহন করেন। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালি জেলায়। বাংলা ভাষার প্রথম টাইপ রাইটার (মুনীর অপটিমা) আবিষ্কার করেন। তাকে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৬ সালে ‘’সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’’ খেতাব প্রদান করেন। কিন্তু, মুনীর চৌধুরী ১৯৭১ সালে এই খেতাব বর্জন করেন
তিনি মূলত ছিলেন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সমালোচক
ও বাগ্মী। তবে, নাট্যকার হিসেবে বেশি পরিচিত । তিনি মৌলিক নাটকের পাশাপাশি অনুবাদ নাটক রচনা করেন। তার
মৌলিক নাটকের মধ্যে আছে রক্তাক্ত প্রান্তর, কবর(১৯৬৬ সাল), পলাশী ব্যারাক ও
অন্যান্য, দন্ডকারণ্য, মানুষ।
১৭৬১ সালের
তৃতীয় পানি পথের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত হয় রক্তাক্ত প্রান্ত। এটি ছিলো লেখকের
প্রথম নাটক। মুনীর চৌধুরী তার এই নাটকের জন্য ১৯৬২সালে বাংলা একাডেমি পুরুষ্কার
লাভ করেন। নাটকটির মূল কাহিনী নেয়া হয়েছে কায়কোবাদ রচিত মহাশশ্মান নামক মহাকাব্য
হবে। এই নাটকটি ছিলো তিন অঙ্ক বিশিষ্ট। এটি মূলত ঐতিহাসিক নাটক নয়, বরং ইতিহাস
আশ্রিত নাটক। কবর; তার অন্যতম
বিখ্যাত নাটক। এটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত প্রথম নাটক । সাংবাদিক
ও প্রাবন্ধিক রণেশ দাশগুপ্তের অনুরোধে তিনি
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকাকালীন সময় ১৯৫৩ সালে এই নাটক লেখেন এবং সেখানেই রাজবন্দিদের
দ্বারা প্রথম মঞ্চায়ন করা হয়।কবর নাটকের অভিনয় হয়েছলো
লন্ঠনের আলোতে। কবর নাটকে কোনো মেয়ে চরিত্র নেই। মার্কিন নাট্যকার Irwin Shaw রচিত Bury The Dead নাটকের অনুসরনে এদেশীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘’কবর’’
নাটক রচিত হয়। দন্ডকারণ্য মূলত নাট্যগ্রন্থ। এতে তিনটি নাটক আছে- দন্ড, দন্ডধর,
দন্ডকারণ্য। ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে রচিত নাটক হলো ‘’মানুষ’’।
শেক্সপীয়রের ‘’The Taming of The Shrew’’ নাটকের অনুবাদ করেন তিনি।
অনুবাদটি ‘’মুখরা রমনী বশীকরন’’ নামকরন করেন। রূপার কৌটা; জন গলস ওয়ার্দির The Silver Box এর
অনুবাদ। এছাড়া তিনি ‘’কেউ কিছু বলতে পারে না’’ নামক অন্য একটা নাটক অনুবাদ করেন।
মীর মানস নামক একটি প্রবন্ধ রচনা করেন তিনি।
১৯৬৫ সালে এই গ্রন্থের জন্য ‘’দাউদ পুরুষ্কার’’ পান।
তার বিখ্যাত উক্তি গুলো –
·
ষোল নয়, আমার মাতৃভাষার ষোলশত রূপ।
·
বাউলের উদাস আহ্বান, মাইকেল-রবীন্দ্রনাথ-
নজ্রুল ইসলাম আমার মাতৃভাষা।
তিনি ১৯৭১ সালের
১৪ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন।
No comments