তমদ্দুন মজলিস
৫৬.৪০ ভাগ পাকিস্তানীদের মাতৃভাষা ছিলো বাংলা। জনসংখ্যার বিচারের বাংলা হবার কথা ছিলো পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু, পশ্চিমা শাসক সমাজ ষড়যন্ত্র শুরু করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার। বাঙালীরা তাদের অধিকার আদায়ে মাঠে নামলে যে সকল সংগঠন এর নেতৃত্ব দেয় তাদের মধ্য অন্যতম হলো তমদ্দুন মজলিস। ইসলামিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্য এর যাত্রা শুরু হলেও বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনের জন্য এটি বেশি বিখ্যাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের তরুন অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় “তমদ্দুন মজলিস”। সংগঠনটির প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ইসলামিক সমাজতন্ত্রের আদর্শ ও ভাবধারা সমাজে প্রতিষ্ঠা, মানুষের ইসলামিক চেতনা শক্তিশালী করা। কিন্তু, পরবর্তীতে এটি বাংলা কে রাষ্ট্র ভাষা করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন।
১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭সাল তিনটি প্রবন্ধ নিয়ে প্রকাশ করে “ পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা উর্দু না বাংলা?” নামক প্রকাশনী। প্রবন্ধ তিনটি লিখেছিলেন কাজী মোতাহার হসেন, আবুল মনসুর আহমদ ও আবুল কাসেম।নভেম্বর মাসে পাকিস্তান শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট শুধু মাত্র বাংলা এবং ইংরেজিকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উল্ল্যেখ করা হয়। এরপরেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবুল কাসেম( তৎকালীন তমুদ্দীন মজলিসের সাধারন-সম্পাদক) নেতৃত্বে মিছিল করে এর প্রতিবাদে।বাংলা কে পূর্বপাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা এবং শিক্ষার মাধ্যম করার জন্য স্পষ্ট দাবি তোলেন। ১৪ নভেম্বর ১৯৪৭ তমদ্দুন মজলিসের সম্পাদক আবুল কাসেম প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। ৬ডিসেম্বর আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিসেম্বরের শেষের দিকে তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে গঠিত হলো প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।
“তমদ্দুন মজলিস” ভাষা আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেছিলেন এবং যার সমাপ্তি হয় ১৯৫৬ সালে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাবার মধ্য দিয়ে।
No comments