Language Movement -01
ভাষা মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করে। তৎকালীন পাকিস্তানের ৫৬% জনগন বাংলা ভাষায় তাদের আবেগ, অনুভূতি প্রকাশ করত। সংখ্যার হিসেবে বাংলাই হবার কথা ছিলো পাকিস্থানের প্রথম রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু পাকিস্তানী সরকার তা নিয়ে টালবাহনা শুরু করলে রাজপথে নেমে আসে বাঙ্গালীরা। জন্ম নেয় “বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ”। যার ফল আজকের বাংলা ভাষা।
দ্বিজাতি তত্বের উপর নির্ভর করে জন্ম নেয়া পাকিস্তানের দুটো অংশ ছিলো- পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অধিকাংশ লোকের ধর্ম ছিলো ইসলামস। কিন্তু, দুই অংশের মধ্যে শুধু ধর্ম ভিন্ন অন্য সামঞ্জস্যতা ছিলো না। ভাষা এবং সংস্কৃতিগত অমিল ছিলো বহু। মূলত দেশের শাসনভার ছিলো পশ্চিম অংশের নেতৃত্বের হাতে। তারা পূর্বপাকিস্তানকে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকভাবে নির্যাতন শুরু করে প্রথম থেকেই। প্রথমেই আঘাত হানে বাংলা ভাষার উপর। ১৯৪৭ সালের ১৮মে হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত “উর্দু সম্মেলনে” এবং ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ কর্তৃক উর্দুকে পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু, বাঙ্গালী সমাজ এই ষড়যন্ত্র কখনই মেনে নেয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবুল কাসেমের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বাংলায় বক্তৃতা দেন) নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের ১ম সেপ্টেম্বর “তমুদ্দন মজলিস” নামক একটি মুসলিম সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠিত হয়। এই সংগঠনের হাত ধরেই ভাষা আন্দোলনের শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনটি “পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু” নামক ভাষা আন্দোলন বিষয়ক পুস্তিকা প্রকাশ করে। এই পুস্তিকার লেখক তিনজন- অধ্যাপক আবুল কাশেম, ড. কাজী মোতাহার হোসেন ও আবুল মনসুর আহমদ। ১৯৪৭ সালের শেষ দিকে ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আবুল কালাম সামসুদ্দীন, ড. এনামুল হক প্রমুখও বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার করার দাবিতে প্রবন্ধ রচনা করেন।
No comments